জামাত নেতা জাফরির সঙ্গে মহাপরিচালকের গোপন বৈঠক - দৈনিকশিক্ষা

জামাত নেতা জাফরির সঙ্গে মহাপরিচালকের গোপন বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জামাতে ইসলামী নেতা ও একটি হত্যা মামলার আসামী কামাল উদ্দিন জাফরীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: বিল্লাল হোসেন। রাজধানীর ইস্কাটন এলাকার রেডক্রিসেন্ট বোরাক টাওয়ারে অবস্থিত অধিদপ্তরে সোমবার (২৮ মে)  সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত দুজনের মধ্যে এ রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। জাফরি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীর বিয়াই। 

এগারো হাজারের বেশি আলিয়া ধারার মাদ্রাসায় নিয়োগ ও এমপিওভুক্তিসহ যাবতীয় বিষয় দেখভাল করার দায়িত্ব মাদ্রাসা অধিদপ্তরের।

বৈঠকের বিষয়ে দৈনিকশিক্ষার পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে মহাপরিচালক মো: বিল্লাল হোসেন বলেন, “এটা কোনো রাজনৈতিক সভা বা বৈঠক ছিলো না। কি বিষয়ে কথা হয়েছে তা সাংবাদিকদের জানার দরকার নেই।” অপর একটি প্রশ্নের জবাব না দিয়ে  উত্তেজিত হয়ে মহাপরিচালক মোবাইল টেলিফোন সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। মতামতের জন্য কামাল উদ্দিন জাফরীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ড. মোহাম্মদ ছরওয়ার আলম দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, ‘জাফরি সাহেব সকালে এসেছিলেন। কি বিষয়ে বৈঠক করেছেন তা তার জানা নেই।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পিওন বলেন, “নাম বলতে পারবো না তবে টেলিভিশনে দেখেছি এমন একজন মাওলানা ডিজি স্যারের রুমে ঢোকার পর আমাদের সবাইকে বলেছেন কেউ যেন রুমে ঢুকতে না পারে। ওই মাওলানার হাতে কতগুলো কাগজ দেখেছিলাম।”  

জানতে চাইলে পরিচালক (প্রশিক্ষণ) কে এম কওসার আলী দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, “আমি তো সকাল থেকে আমার রুমেই কাজ করছি। ডিজি স্যারের কাছে কে এসেছেন কে গেছেন তা আমার জানার ও দেখার বিষয় না।” 

জানা যায়, বিল্লাল হোসেন বি সি এস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। তার বর্তমান পদ যুগ্ম-সচিব। তার ব্যাচের অধিকাংশ কর্মকর্তা সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হলেও নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়নি বলে জানা যায়। প্রায় চার বছর যাবত বিল্লাল হোসেন নব্গঠিত মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে রয়েছেন। অধিদপপ্তরের ওয়েবসাইটে তার নিজের কোনো সুষ্পষ্ট ছবি  আপলোড করেন না।    মাদ্রাসায় নিয়োগবোর্ডে দুর্নীতিবাজদের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেয়া ও  নিয়মিত এমপিওর (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) চেক ছাড় করতে না পারাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে।  

গতবছর খালেদা জিয়ার  ইফতার মাহফিলে জাফরি

 ৭৫ বছর বয়সী কামাল উদ্দিন জাফরী নরসিংদীর জামেয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসার দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ পদে ছিলেন। এক বছর আগে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে বসানো হয়েছে জাফরির জামাতাকে। আর ওই মাদ্রাসার মহিলা শাখার অধ্যক্ষ পদে বসানো হয়েছে জাফরির মেয়েকে। এই দুটি নিয়োগে জাফরিকে সহায়তা করেছেন মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিল্লাল হোসেন।

জানা যায়, বেসরকারি বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানও জাফরি। বিশ্ববিদ্যায়টির উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী। ২০০২ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকলে শামসুন্নাহার হলের ভেতরে পুলিশ পাঠিয়ে ছাত্রীদের নির্যাতনের করান। এ অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি। বিএনপি-জামাত আমলে গ্রীন ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইসলামি ইউনিভার্সিটির মালিক ছিলেন জাফরি। সরকার পরিবর্তন হলে গ্রীনের মালিকানা হস্তান্তর করেন জাফরি। ওইসময়ে গ্রীন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ছিলেন আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে সৌদি-বাংলা সমবায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তন হয় চলতি বছর।  আচার্য  রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও সমাবর্তনে যাননি। 

২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট রাত ৯টার দিকে ১৭৪ পূর্ব রাজাবাজারের দোতলা বাসার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ইসলামি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে হত্যা করা হয়। ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর জামায়াতের রোকন তারেক মনোয়ারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি হত্যা দায়ের হয়। ওই মামলার অন্যতম আসামী কামাল উদ্দিন জাফরী।

২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত কামাল উদ্দিন জাফরীর নরসিংদীর ওই মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।  উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন দূতাবাসের গোপন তারবার্তায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বিএনপি-জামাত জমানায় সরকার কর্তৃক-গঠিত মাদ্রাসা সংক্রান্ত যে কোনো কমিটিতে কামাল উদ্দিন জাফরির নাম থাকতো। 

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040998458862305